রিপোর্ট : রফিকুল ইসলাম
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, নানা কারণে বাংলাদেশের পানি দূষণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই দূষণ রোধে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সচেতন হতে হবে। নইলে এই দূষণ আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে।
আজ সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ ৪ নম্বর লেকে ফ্লোটিং ট্রিটমেন্ট সিস্টেম (FTWS) গ্রিন টেকনোলজি ব্যবহার কিভাবে পানি দূষণ রোধ করা যায় তার শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আমেরিকা, জাপান, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের যৌথভাবে গ্রীন টেকনোলজি ব্যবহার করে বিপন্ন পানি কি ভাবে পরিবেশ বান্ধব করা যায় সেই লক্ষ্যে ধানমন্ডি লেকে এ কার্যক্রম করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগে দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আজকে সারা পৃথিবী জুড়ে বিশুদ্ধ পানির সংকট তৈরি হয়েছে। পৃথিবীর দুই তৃতীয়াংশ মানুষ বিশুদ্ধ এই পানির সংকটে রয়েছে। তারা পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে না। চট্টগ্রামের মিরেশ্বরী কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে পানির স্তর এত নিচে নেমে গিয়েছে যে গভীর নলকূপ দিয়েও তারা পানি পাচ্ছে না।
ধানমন্ডি লেকে এই কার্যক্রম পরিচালনা করায় আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা বাংলাদেশ নামক বদ্বীপ জন্য একটা ডেলটা পরিকল্পনা করেছেন। আজকের এই প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর সেই পরিকল্পনার অংশ। তিনি আরো বলেন, ধানমন্ডি লেক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত একটি স্থান । বঙ্গবন্ধু এক সময় এই লেখে মাছ ধরতেন। বঙ্গবন্ধুর শিশু পুত্র রাসেল এই লেকের পাশ দিয়ে সাইকেল চালাতেন।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আজকে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নানা কারণে বিশুদ্ধ পানি দূষিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে নগরায়নের কারণে দূষিত হচ্ছে। কিন্তু তা রক্ষা করার কোন ব্যবস্থা আমাদের নেই। আজকে আমরা অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করছি, কৃষি জমিতে ব্যবহার করা ওই সকল কীটনাশক কোন না কোন ভাবে পানিতে মিশে যাচ্ছে। এ কারণেই পানি দূষিত হচ্ছে। পানিকে দূষণমুক্ত রাখতে আজকের এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, পানির গুরুত্ব কতটা তা আমাদের সকলকেই বুঝতে হবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে নদীর উপরে কচুরিপানা দিয়ে ফসল উৎপাদন করার বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে নদীতে কচুরিপানাতে যেভাবে ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে। সেখানে কোন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। ফলে ওই সকল ফসল উৎপাদনে কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই। অথচ এক সময় এই কচুরিপানাকে আবর্জনা হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। কিন্তু আজকে সেগুলো ফসল উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই কচুরিপানাই এখন অনেক কৃষকের জন্য আশীর্বাদ।
প্রকল্পটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ড তৌহিদা রশীদ এর তত্বাবধানে বাস্তয়িত হচ্ছে। এর সাথে মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড সিরাজুল হক এবং ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুন নাহার সুমাইয়া যুক্ত রয়েছেন। প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড তৌহিদা রশীদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাটি পরিচালনা করা হচ্ছে ২০২২ সাল থেকে এবং গবেষণায় গ্রীন টেকোলজি ব্যবহার করে পানির দূষণ মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে বিধায় আজকে ধানমন্ডি লেকে ফিল্ড এক্সপেরিমেন্টের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ধানমন্ডি লেকে ৪ মাস গবেষণার পর ঢাকা ও আশেপাশের লেকগুলোতো বাস্তবায়ন করা হবে। অত্যন্ত স্বল্প ব্যয়ে পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি টি বাংলাদেশের জলাশয়ে দূষণের মাত্রা কমিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বাবলা, প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ডক্টর তৌহিদা রশিদ প্রমুখ।