মাহমুদুল হাসান সুজন:
২৭শে মে ২০১২ সালে পূর্বে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ ও ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি টিফিনের দাবি এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে ৫শে অক্টোবর বুধবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেন বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।
বাংলাদেশের সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সভাপতি মোঃ মামুনুর রশিদ খোকন এর সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমিতির মহাসচিব আ.স.ম জাফর ইকবাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ফিরোজ উদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি শাহনাজ পারভীনসহ সারা দেশ থেকে আসা সমিতির অন্যান্য সদস্যরা।
পূর্ব ঘোষিত অনুযায়ী বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও পরবর্তীতে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু পুলিশি বাধার কারণে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন না করে পরবর্তীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আলোচনা সভা করেন এবং আগামী ৬ অক্টোবর স্মারকলিপি প্রদান করবে বলে জানান।
এ সময় আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান,শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার । আর সেই শিক্ষাদান করে থাকেন প্রাথমিক শিক্ষকেরা। অধিকার আদায়ে তারা সারা বছর
রাজপথে আন্দোলন করে থাকেন, যা একটি দেশের জন্য কাম্য নয়। ৫ অক্টোবর ২০২২খ্রিঃ আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস । শিক্ষকদের দাবি ৯ জানুয়ারি ২০১৩ সনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৬,১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষনা দিয়ে জাতির পিতার মত আরও একটি ইতিহাস রচনা করেন ।কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় যে, জাতীয়করণ কালীন ২৬,১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিসংখ্যান করা হয়েছিল তার সংখ্যা যথাযথ না হওয়ায় জাতীয়করণ যোগ্য আরও কিছু সংখ্যক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কর্মরত শিক্ষকগণ জাতীয়করণ হতে বঞ্চিত হয়। ৩য় ধাপের বিদ্যালয়সমূহ জাতীয়করণের ক্ষেত্রে ২৭মে ২০১২ সনের পূর্বে স্থাপিত ও পাঠদানের অনুমতির জন্য আবেদনকৃত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হবে। একই সম-পরিমান যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তৎকালীন কিছু কর্মকর্তা কর্মস্থলে না থাকায়, সকল শর্ত পূরণ করার পরেও ৪১৫৯টি বিদ্যালয় জাতীয়করণের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। জাতীয়করণ কালীন সময়ে পাঠদানের অনুমতি ও রেজিট্রেশন এর কার্যক্রম স্থগিত রাখায় আমরা
বেতন-ভাতা সুবিধা ও ছাত্র-ছাত্রীরা উপবৃত্তি টিফিন থেকে বঞ্চিত হয়।
আমাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ন কোনো প্রকার সহিংসুতা বা কারো প্ররোচনায় নয়। আমরা দীর্ঘ বছরের পর বছর বিনা বেতনে বিদ্যালয়ে শিশুদের পাঠদান করে আসছি। অনেক শিক্ষক ইতিমধ্যে চাকরির বয়সসীমা হারিয়েছে । আমাদের সন্তানদের লেখাপড়া খরচ ও ভালো পোষাক কিনে দিতে পারিনা । বাবা-মায়ের অসুখে ডাক্তার খরচ যোগাতে পারিনা । মানবেতর জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে কেবল আমরা মানবতার মা জননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের দুঃখ কষ্টের কথা গুলো তুলে ধরাই আমাদের মূল লক্ষ। তিনি যদি ১১লক্ষ রোহিঙ্গা কে বুকে টেনে নিয়ে মায়ের মমতায় আশ্রয় দিয়ে ভরন পোষনের
দায়িত্ব নিতে পারেন, নিজ অর্থায়নে পদ্মাসেতুর মত বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। তাহলে আর মাত্র ৪১৫৯টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে, এই অভিশপ্ত শিক্ষকদের জীবন থেকে দুঃখ কষ্ট মুক্ত করে দু-মুঠো ডাল-ভাতের সুযোগ সৃষ্টি করতে আস্থা ও ভরসার প্রতীক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।